News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২

আমাদের ছোটবেলা, কোরবানি ও আত্মত্যাগ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | আরিফুল প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৩, ০৫:১৬ পিএম আমাদের ছোটবেলা, কোরবানি ও আত্মত্যাগ

আমাদের সকলেরই ছোটবেলার অনেক মজার মজার গল্প আছে। আসলে শৈশবে আমাদের আত্মত্যাগের চিন্তা থেকে মজার চিন্তাটাই বেশি থাকতো। ছোটবেলায় গরুর হাট দেখতে যাওয়া, কোন হাটে কয়টা বড় গরু দেখা গেছে ভালোভাবে মনে রাখা খুবই দরকার ছিল। ঈদের ছুটির পর যখন স্কুলে যাবো তখন গল্পের ঝুড়িতে বন্ধুদের অবাক করবো। বন্ধুরা অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে গরুর গল্প শুনবে। একটা ভাবই আলাদা।

আর একটা সময় ছিল উদ্ভট কাহিনী করতাম। ঈদগাহে সবাই যখন সেজদায়, আমি তখন দাঁড়িয়ে দেখতাম হাজার হাজার মানুষ একসাথে সেজদায়! যদিও এই কাজ করা মোটেও উচিত না, তবুও বুঝতে হবে ছোট ছিলাম তো।

কোরবানির ঈদে নামাজ শেষে বাসায় এসে গরু কোরবানি বা কাটাকাটি নিয়ে সবার মাঝে অনেক উত্তেজনা থাকলেও আমি শুধু অপেক্ষায় থাকতাম যে কখন গরুর রক্ত পায়ে লাগাবো; কখন রক্ত দিয়ে হাত রাঙাবো।

কোরবানি মানেই আত্মত্যাগ। সেটা মা-বাবার কাছ থেকে শুনে শুনেই মুখস্থ করা ছিল, কিন্তু তখন তার প্রকৃত ফজিলত জানা ছিল না।

ছোট বেলায় আমি যখন ক্লাস ওয়ানের ছাত্র ছিলাম তখন যে কোন একটা কারণে আমার পুরো পরিবার নানুর বাসায় থাকি। তখন সম্ভবত ১৫ হাজার টাকা দিয়ে আব্বু নানুর বাসায় একটা গরু কিনে নেয় যা আম্মু লালন পালন করেছিল। একসময় গরুটি বড় হতে থাকে। সেই গরুকে খড় ও ঘাস খাওয়ানোর স্মৃতি আজও মনে পড়ে। তখন ঐ সময় যখন কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসলো অর্থের প্রয়োজনেই সেই গরুটিকে হাটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। অথচ এই গরু লালন পালনে আম্মুর কত যে ত্যাগ ছিল তা বলে বোঝানোর মত না। চাইলে আমরা সেই গরু দিয়েও কোরবানি দিতে পারতাম কিন্তু অর্থনৈতিক সমস্যা চরম পর্যায়ে চলে যাওয়ায় শখের গরুটি দিয়ে কোরবানি দেওয়া হয়নি।

এখন এই পর্যায়ে এসে বুঝি আমরা যেই গরু দিয়ে কোরবানি করি সেই গরুর পিছনে একজন বেপারী বা রাখালের কত আত্মত্যাগ রয়েছে।

এখন আর রক্ত ভয় পাই না, অনেক বড় হয়ে গেছি! জবাই করার সময় গরুর দমে ধরাও শিখে গেছি। আল্লাহর জন্য কোরবানি করতে আবার ভয় কিসের?

কোরবানি দেওয়ার মাধ্যমে মহান রবকে খুশি করার লক্ষ্যে আমাদের ও গরু লালন-পালনকারীর আত্মত্যাগ কবুল করুক।

Islam's Group